সবার সংবাদ ডেস্ক:
মেহেরপুর মুজিবনগরের আব্দুল মতিন। বিআরডিবি নামের একটি এনজিওর ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। চাকরি ছেড়ে মনোনিবেশ করেন বিভিন্ন ধরণের চাষে। নিজের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ফসল উৎপাদন করে ভাগ্যবদলের নেশায় ডুবে যান তিনি। নতুন নতুন সবজি চাষে মনোনিবেশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ইউটিউবে স্কোয়াশ চাষের একাধিক প্রতিবেদন দেখে স্কোয়াশ চাষে উদ্বুদ্ধ হোন তিনি। স্কোয়াশ চাষি আব্দুল মতিন মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
উচ্চমূল্যের নতুন জাতের আঁশজাতীয় বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষ করে লাভবান হয়েছেন মেহেরপুর মুজিবনগরের আব্দুল মতিন। এনজিওর চাকরি ছেড়ে নতুন জাতের সবজি স্কোয়াশ চাষ করে সফল চাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। স্কোয়াশ একটি বিদেশি সবজি। স্কোয়াশ মূলত একটি শীতকালীন সবজি। এটা দেখতে অনেকটা বাঙ্গি ফলের মতো। এটি মিষ্টি কুমড়ার স্বাদে পুষ্টিকর একটি সবজি। সবজি হিসেবে এই এলাকায় স্কোয়াশ নতুন হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ও দামও আশাব্যঞ্জক। পরে ঢাকা থেকে স্কোয়াশের বীজ সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে স্কোয়াশের চারা রোপণ করেন তিনি। মাস দেড়েক পরেই গাছে দুই-তিনটি করে স্কোয়াশ ফল ধরতে শুরু করে। বর্তমানে সবুজ, হলুদ ও সাদা রংয়ের স্কোয়াশ ধরে আছে গাছগুলোতে। স্কোয়াশ বিক্রি উপযোগী হতেই বিক্রি শুরু করেন তিনি। বর্তমানে বাজারে স্কোয়াশ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে খুচরা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
স্কোয়াশ চাষি আব্দুল মতিন বলেন, বিআরডিবি নামের একটি এনজিওতে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতাম। চাকরি ছেড়ে মনোনিবেশ করি বিভিন্ন ধরণের চাষে। মাথায় আসে নতুন কি ফসল করা হয়। তারপর ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করে এ বছর ১ বিঘা জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছি। ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৪২ শত গাছ আছে। আমার ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১ লক্ষ টাকার স্কোয়াশ জমি থেকে বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে জমিতে যা ফসল আছে আরও ৫০ থেকে ১ লক্ষ টাকা বিক্রির সম্ভবনা আছে। প্রতিটি গাছে ৮-১০টি করে ফল এসেছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিদিন ৪’ থেকে ৫’শ ফল বিক্রি হচ্ছে। প্রথমে ঢাকাতে পাঠিয়েছিলাম। পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় স্থানীয় বাজারেই এগুলো বিক্রি করছি। আমাকে দেখে অনেক কৃষকও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আগামীতে স্কোয়াশ চাষের পরিধি আরও বৃদ্ধি করার আশা আছে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ (অতি: দায়ি:) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, স্কোয়াশ বিগত কয়েকবছর ধরেই বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে। মেহেরপুর জেলার মাটি অত্যান্ত উর্বর হওয়ায় এ জেলায় বারো মাস বিভিন্ন শাকসবজি কৃষকেরা চাষ করে। এ জেলার কৃষক স্মার্ট এবং আধুনিক। তারা নতুন নতুন ফসল এবং প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী। তেমনি মেহেরপুরে এবছর স্কোয়াশ নামের একটি উচ্চমূল্যের সবজি চাষ হয়েছে। মুজিবনগর উপজেলার একজন কৃষক উৎসাহী হয়ে স্কোয়াশ চাষ করেছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি স্কোয়াশ চাষ সামনে আরও সম্প্রসারিত হবে।