পাট নিয়ে বিপাকে মেহেরপুরের চাষীরা
টপ নিউজ কৃষি মেহেরপুর

পাট নিয়ে বিপাকে মেহেরপুরের চাষীরা

সবার সংবাদ ডেস্ক:

গত কয়েক বছর ধরে পাটের বাজার দর কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে মেহেরপুরের চাষিদের। চলতি বছর অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষে খরচ বেশি ও বর্তমানে পাট কাটা শুরু হলেও জাগ দেয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। পাটের গুণগত মান ধরে রাখার জন্য চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

মেহেরপুর জেলা তথ্য অফিসের মতে জেলা ২০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। বাংলাদেশ সোনালী আঁশের দেশ হলেও পাটের সেই সুদিন এখন আর নেই। গত কয়েক বছর ধরে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পাট চাষ থেকে। চলতি বছর অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষে খরচ বেশি হয়েছে। বর্তমানে পাট কাটা শুরু হলেও জাগ দেয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। বিঘা প্রতি জমিতে পাট চাষে খরচ হচ্ছে ১৫থেকে ১৭ হাজার টাকা। এবার নদীতে পাট জাগ দিতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে জাগ দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তারা।

এদিকে পুকুর কিংবা জলাশয়ে পাট জাগ দিতে বিঘাপ্রতি এক থেকে দুই হাজার টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে পুকুর মালিকদের। রিবন রেটিং পদ্ধতি নিয়েও স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই চাষিদের।সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বড় বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনে গুদামজাত করে থাকে। এতে চাষিরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। এদিকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পাট আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন এসব চাষি।

সদর উপজেলার কালী গাংনী গ্রামের কৃষক তৌহিদুল ইসলাম জানান, এক বিঘা জমিতে পার্ট আবাদ করতে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। জমি থেকে উৎপাদিত পাট বিক্রি করে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকার বেশি বিক্রয় করা সম্ভব হয় না। শুধুমাত্র পাট কাঠির আশায় পাঠ বপন করা হয়। গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের কৃষক হাচিবুল ইসলাম জানান, তেল,বীজ,সারের যে দাম তাতে উৎপাদন করে আর লাভ হচ্ছে না। প্রয়োজনে জমি বিক্রি করে খাব তারপরেও আর পাটের আবাদ করবো না।

মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, সরকারিভাবে নদী-নালা খাল দিলে পাট চাষ দেওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা পাট নিয়ে খুব বিপদে আছি। এখন এতগুলো টাকা খরচ হত্যা করে পাট নিয়ে কি করব সেই চিন্তায় মাথায় ভাজ ধরেছে।

লক্ষীনারায়নপুর গ্রামের পুকুর মালিক লিটন জানান, বিঘা প্রতি দুই টাকার বিনিময়ে পুকুরে পাট পচাতে দিচ্ছি। প্রথম চালানে ১৩ বিঘা জমির পাট পচাতে দেয়া হয়েছে। এই সেদিনে আশা করি তিন থেকে চার চালানের পাট দিতে পারবো। এতে আমার ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা আয় হবে বলে মনে করছি। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার সামসুল আলম জানান, জমির এক কোণে গর্ত করে নিচে পলিথিন বিছিয়ে সেলোমেশিন দিয়ে বা বৃষ্টির পানি জমা রেখে পাট পচানোর পরামর্শ দিয়েছি।