সবার সংবাদ প্রতিবেদক:
মেহেরপুর শহরের কুষ্টিয়া সড়কে দিঘীর পাড়ায় ‘সিডার’ ক্ষুদ্র ঋণ কমর্সূচি নামের একটি এনজিও সংস্থা গ্রাহকদের কাছে থেকে ঋণ দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। রবিবার ঋণ নিতে এসে গ্রাহকরা দেখেন আসবাবপত্র নিয়ে অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে এনজিওর কর্মকর্তারা।
এসময় সেখানে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অভিযুক্তের বিচার দাবি করেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার মদনা, গোপালপুর,শ্যামপুর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহক সংগ্রহ করে ঋণ দেওয়ার নামে ১০ শতাংশ করে জামানত সংগ্রহ করে সংস্থাটি। এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে গ্রাহকদের কাছে আশরাফুল আলম নামে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন।
জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে আব্দুল মতিন নামের একজনের কাছে থেকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা অফিস করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। হঠাৎ করে দুএকদিন আসা যাওয়া করেন। আজ রবিবার গ্রাহকদের ঋণ দেওয়ার দিনে তারা আসবাবপত্র নিয়ে উধাও হয়েছে। তবে তাদের কখনো কেউ দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। পরে বাড়ি মালিক এনজিও সাইনবোর্ড টি খুলে দেন।
নতুন মদনাডাঙ্গা গ্রামের সীমা খাতুন জানান, ৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে তার সাথে ১৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। রবিবার তার ঋণের ৩ লাখ টাকা দেওয়া কথা। কিন্তু সকালে অফিসে এসে দেখতে পান অফিসে কেউ নেই। আসবাবপত্রও নেই। তিনি বলেন, তার স্বামীকে গোপন করে তিনি এ টাকা দিয়েছেন। তার স্বামী জানতে পারলে তাকে বাড়িতে উঠতে দেবে না। এখন পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।
একই গ্রামের হেলাল জানান, তার সাথেও ৩ লাখ ঋণ নেওয়ার কথা বলে ১৮ হাজার নেওয়া হয়েছে, নাজমা খাতুন, হাফিদজুল ইসলাম সহ মদনাডাঙ্গা গ্রাম থেকে ৯ জন দিয়েছেন ১ লাখ টাকা। এসময় তাদের কাছে সংস্থাটি পাসবই দেয় বলে জানান তারা।
কুতুরপুর গ্রামের সাজেদা খাতুন এক লাখ ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, মর্জিনা খাতুন দিয়েছেন ৫হাজার টাকা, হিরা খাতুন ৭ হাজার, আনোয়ার হোসেন ৭ হাজার টাকা। শ্যমপুরের ভ্যান চালক মাসুম হোসেন ২ লাখ টাকা ঋণ পাবেন বলে দিয়েছেন ১২ হাজার। ঋণ নিতে এসে অফিস উধাওয়ের খবর পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়াও সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রাহকরা এসে অফিসে কাউকে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং সেখানে অবস্থান নেন।
বাড়ির মালিক আব্দুল মতিন জানান, কয়েক দিন আগে সিডার এনজিও সংস্থার মেহেরপুর শাখার ম্যানেজার হিসেবে আশরাফুল আলম নামে একজন ১৪ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া চুক্তিতে বাসা ভাড়া নেন। ১০ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠিক ভাবে কাষক্রম শুরু করার কথা থাকলেও শনিবার থেকে এনজিও ম্যানেজারের ফোন বন্ধ পান। পরে বাড়ির সামনে গ্রাহকদের ভিড় জমতে দেখেন। বাসা ভাড়ার সময় একটি জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করেন তারা।
টাকা ফেরত পেতে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিলো।