সবার সংবাদ ডেস্ক:
জমিজমা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আদালতে প্রতিবেশি এক পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করলে আদালত মিথ্যা মামলা করার দায়ে বাদিনী রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ১ বছরের কারাদন্ড সহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ড রায় প্রদান করেছেন। বুধবার মেহেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো: তহিদুল ইসলাম এই রায় দিলে বাদিনীকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মেহেরপুর জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের পিপি সরকারী কৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান জানান- ২০২১ সালে বাদীনি রোজিনা ইসলাম (৩৩) প্রতিবেশি বাবলুর রহমান (৪৪) এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন-২০০০ এর) ২৭ (১) ধারায় মামলা করে। মামলার অভিযোগ-বাবলুর সাথে তার মেলামেশা ছিল।
সেই সুবাদে ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল রাত্রে আসামী বাবলু বাদী রোজিনা ইসলামের ঘরে যায়। ঘরে ঢুকে বাদিনীকে জোরপূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে। এই সময় তার শরীর বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। বাদিনী এবং আসামী দুজনেরই বাড়ি মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বিশ্বনাথপুর গ্রামে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মেহেদী হাসানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিলে তিনি ২০২১ সালের ১৯ আগষ্ট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাবলু গ্রামে ঘর জামাই হিসাবে বসবাস করে। বাবলুর চাচা শশুড়ের সাথে যাওয়া আসার পথ নিয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সেই পথের মালিকানা দাবী করে বাবলুর চাচা শশুর সহ সে রাস্তা ঘিরে নিতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। তারই জের হিসাবে রোজিনা খাতুন প্রতিবেশি বাবলুর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির এই মামলা করেছেন উল্লেখ করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর বাবলু বাদী হয়ে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন-২০০০ এর) ১৭ (১) ধারায় মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে আত্বসম্মানহানি ও সামাজিক ক্ষতির অভিযোগ এনে একই আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। আদালত উভয় মামলার সাক্ষী জবানবন্দি গ্রহণ শেষে রোজিনা ইসলামের অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় বাদীনির বিরুদ্ধে এই রায় প্রদান করেছেন।