মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন: প্রবীণ কামড় দিয়ে নেমেছে নবীনের বিরুদ্ধে
টপ নিউজ মেহেরপুর

মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন: প্রবীণ কামড় দিয়ে নেমেছে নবীনের বিরুদ্ধে

সবার সংবাদ ডেস্ক :

১৭ অক্টোবর মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন। দিন যতই আসছে অপেক্ষার প্রহর ততই ছোট হয়ে আসছে। বিপরীতে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচরণা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে। প্রার্থীরা বলছেন- সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু এই নির্বাচনে যেহেতু ভোটার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তাই এমন ভোটারদের মন বুঝতে এবং তাদের পক্ষে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। এ কারণে একজন ভোটারের কাছে একাধিকবার ধর্ণা দেওয়া লাগছে।

এবারের মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই হচ্ছে প্রবীণের সাথে নবীনের। প্রবীনের অস্তিত্বের লড়াই। আর নবীনের রাজনীতিতে নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার লড়াই। সবমিলিয়ে প্রবীণ মরণ কামড় দিয়ে নেমেছে নবীনের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন- সময় যত গড়াচ্ছে জয়পরাজয় নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা, নির্বাচনী হিসেবনিকেশ উলোটপালট হচ্ছে। ভোটের সমীকরণ মেরুকরণ বদলাচ্ছে। তাই জয়পরাজয় এখন নিশ্চিত  না তাদের দৃষ্টিতে। তবে, লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত প্রবীণ এগিয়ে রয়েছেন এমনটাই মত দিয়েছেন তারা। আবার জয়ের দৌড়ে নবীণের গতি সেই মুহুর্তে প্রবীণকে টপকে যেতে পারে এমনটাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউ।

ভোটারদের সাথে কথা বলে এবং নির্বাচনী মাঠ পর্যবেক্ষণে জানা গেছে- মেহেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, আইনজীবি আব্দুস সালাম এবং জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল দুইজনই নির্বাচনী জয় তাদের পক্ষে নিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মতে ২০১৫ সালে উপজেলা নির্বাচনে গোলাম রসুলের প্রতিপক্ষ হিসাবে আব্দুস সালাম বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিল। সে কারণে এবার গোলাম রসুল তার প্রতিপক্ষ হিসাবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে। যদিও একথা মানতে নারাজ দুই প্রার্থীর ঘনিষ্টজনেরা। এই মহলটির দাবী- গোলাম রসুলের নিজস্ব কিছু ভোট রয়েছে। যা আব্দুস সালামের অতটা নেই। তবে, এবারের নির্বাচনে যেহেতু দুজনই আওয়ামী লীগের সেহেতু দলীয় সিদ্ধান্তের চাইতে টাকার দৌড়ে যিনি এগিয়ে থাকবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। তাহলে টাকার দাপটে কে এগিয়ে সেটা সকলেই জানলেও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছেন না। জনশ্রুতি রয়েছে- চেয়ারম্যান প্রার্থীদ্বয়কে বড় অংকের টাকা দিয়ে ভোট কিনতে হচ্ছে।

এই নির্বাচনে ইতোমধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় গাংনী উপজেলা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে জয়ী হয়েছেন জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী এবং জনপ্রিয় নারীনেত্রী শাহানা ইসলাম শান্তনা। মেহেরপুর সদরে জেলা পরিষদের অপর সাবেক সদস্য মহিলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেত্রী শামিম আরা হীরা জয়ের দৌড়ে এখনও পর্যন্ত অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। অনুরূপভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেহেরপুর সদর আসনে পুরুষ সদস্য হিসাবে জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ মিরণের জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলছেন অনেকেই।

তবে, নির্বাচন জমে উঠেছে গাংনী উপজেলাতে। সেখানে জেলা পরিষদের মেম্বার নির্বাচনে প্রভাবশালী প্রার্থীরা এখনই ভোটারদের আর্কষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা জয়ের প্রশ্নে অর্থকে মুখ্য ভেবে নিয়েছেন। সে কারণে এই সুযোগ কাজে লাগাতে ছাড়ছেন না ভোটাররা। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, ঠিকাদার, যুবলীগ নেতা মজিরুল ইসলাম, গাংনী রাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মখলেছ এবং গাংনী পৌর মেয়র আহম্মদ আলীর জামাতা মিজানুর রহমান। এই আসনে মজিরুল ইসলাম এখনও পর্যন্ত এগিয়ে বলছেন ভোটাররা। 

বর্তমান ভাবনায় ভোটাররা এমন পরিসংখ্যানের কথা স্বীকার করলেও ভোটগ্রহণ শেষ না পর্যন্ত জয় পরাজয়ের টানাপোড়ন ফলাফলকে যে কোন উল্টাতে পারে। তাই মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ সকল প্রার্থী। সকলেই জয় নিশ্চিত করতে মাঠে কামড়ে পড়ে আছে নির্বাচনী মাঠে।