গাংনীতে ফিরতে শুরু করেছে আত্মগোপনে থাকা সুদকারবারীরা
টপ নিউজ মেহেরপুর

গাংনীতে ফিরতে শুরু করেছে আত্মগোপনে থাকা সুদকারবারীরা

সবার সংবাদ ডেস্ক:

মেহেরপুরের গাংনীতে গ্রেফতার আতংঙ্কে আত্মগোপনে শেষে আবারো এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে সুদ কারবারীরা। অজ্ঞাত শক্তির ইশারায় এলাকায় এসে আবারো বেপোরোয়া হয়ে উঠছে উত্তরপাড়ার কয়েকজন সুদ ব্যবসায়ী। সুদ কারবারীরা এলাকায় ফেরায় তাদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ভুক্তভুগীদের।

এদিকে পুলিশি অভিযান চললেও সুদকারবারীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুদের কারবারিরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গাংনী উপজেলা শহর থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে সুদকারবারীরা। এসব সুদের টাকা আদায়ের জন্য এদের রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। সুদের টাকা আদায়ের নির্যাতন নিপিড়ন করে জমি রেজিষ্ট্রি থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল ও সোনাদানা পর্যন্ত কেড়ে নেয় নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা। এতে বিপাকে পড়েছেন অসহায় মানুষ।

সুদকারবারীদের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন তারা। নিন্ম আয়ের মানুষ ও বিপাকে পড়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে সুদকারবারীদের দ্বারস্থ হতে হয়। তাদের এই সংকটকে পুঁজি করেই সুদ বা দাদন ব্যবসা গড়ে তুলেছে অনেক সুদকারবারী। আসল টাকা কখনোই পরিশোধ হয় না ফলে এই সুদি চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না অসহায় মানুষ।

গত ১১ মার্চ গাংনী উত্তরপাড়ার হানিফ, আনারুল ও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের হাতেম আলী পুলিশী অভিযানে গ্রেফতার হলেও তাদের সহযোগিরা পলাতক রয়েছে। সম্প্রতি গাংনীর পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের শীর্ষ সুদকারবারী শফির বিরুদ্ধে কয়েকজন নারী সংবাদ সম্মেলনে বিচারের দাবি করার পাশপাশি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে এসআই মাসুদ। তিনি জানান, শীর্ষ সুদকারবারী শফি এলাকাতে নেই। তবে তার অবস্থান সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের জনৈক্য এক ব্যক্তি বলেন, শীর্ষ সুদকারবারী শফির বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। তিনি টাকা নেওয়ার পর আসল সহ কয়েকগুন সুদ ফেরত দিলেও শফির হাত থেকে রক্ষা পাননি তিনি। পরে শফির নামে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

ধর্মচাকী গ্রামের তাইজুল ইসলামের স্ত্রী নিলুফা খাতুন বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারনে উত্তরপাড়ার আনারুল ইসলামের কাছে ২ লাখ টাকা নেয়া হয়েছিলো। এরপর ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার পরও চেক ও নন জুডিসিয়াল ষ্ট্যাম্প ফেরত না দিয়ে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। গাংনী থানার এসআই আশিক বলেন, উত্তরপাড়ার সুদকারবারী আনিসের নামে মামলা রয়েছে। পুলিশি অভিযানের পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। গাংনী থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাংনীর নজরুল,দুখি সহ কয়েজনের বিরুদ্ধে সুদকারবারীর অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আব্দুল রাজ্জাক বলেন, সুদকারবারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হেেচ্ছ। ইতোমধ্যে ৪জন সুদকারবারীরর নামে দুটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন গ্রেফতার ও একজন পলাতক রয়েছে। এছাড়া উত্তরপাড়ার কয়েকজন নজরদারীতে রয়েছে।

পুলিশ সুপার ও গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ অভিযানে অংশ নেয়া সকল পুলিশ সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্থানীয় ও ভুক্তভুগীদের দাবি সুদকারবারীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত রাখার। তাহলে সুদকারবারীদের হাত থেকে সাধারন মানুষ কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে। এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে সুদকারবারীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।