সবার সংবাদ ডেস্ক:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে স্যান্ডেল দিয়ে পেটানোর প্রতিশোধ নিতেই বিয়ে করে বুলুয়ারাকে হত্যা করেছে প্রাক্তন স্বামী আহসান আলী মোল্ল্যা (৩৫)। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর আহসান আলী মোল্ল্্যা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যই দিয়েছে মুজিবনগর থানা পুলিশকে।
মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম ও মুজিবনগর থানার তদন্ত অফিসার আব্দুল আলীমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে শরিয়তপুর জেলার সখিপুর উপজেলার চরকমরিয়া ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারের জনৈক নাজমুল হোটেলের সামনে থেকে গ্রেফতার করেন।
তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হলেও গতকাল শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানান পুলিশ। মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহসান আলী মোল্ল্যা মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের হঠাৎপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তার মোল্ল্যার ছেলে। গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরের দিকে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের একটি ইটভাটার অদুরে ফিরাতুল ইসলামের গম ক্ষেত থেকে বুলুয়ারার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে বিবস্ত্র করে শ্বাসরোধ ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে সে।
পরের দিন সকালে ২১ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত করার পর তার পরিবারের লোকজন মরদেহের পরিচয় সনাক্ত করেন। এঘটনায় বুলুয়ারার ভাই আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে ৩০২/৩৩ পেনাল কোড ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ০৮. তারিখ ২১/০২/২০২৩ ইং। হত্যাকান্ডের ৩ দিন পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার প্রাক্তন স্বামী আহসান আলী মোল্ল্যাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্ত অফিসার মুজিবনগর থানার (ওসি তদন্ত) আব্দুল আলীম বলেন, বিয়ের আগে নিহত বুলুয়ারার পরোকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরোকীয়া প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বুলুয়ারা খাতুন ও আহসান আলী মোল্ল্যা বামন্দী সিনেমা হলের দোতালার উপর স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়ে। এসময় তাদের পরোকীয়া প্রেমের কথা আহসান আলী অস্বীকার করলে প্রকাশ্যে দিবালোকে পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে পেটায় বুলুয়ারা খাতুন।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঐ দিনই সে বুলুয়ারাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনামতে বছর দুয়েক আগে বুলুয়ারা খাতুনকে বিয়ে করে নিয়ে যায়। প্রায় দেড় বছর সংসার করার পর তাকে তালাক দিয়ে দেন আহসান আলী। পরে আবারো সে ফিরে যায় প্রাক্তন স্বামীর ভিটায়। সেখানে তার আগের পক্ষের মেয়ে সামিয়াকে নিয়ে বসবাস করতেন। সম্প্রতি আবারো নতুন করে তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বার্তা শুরু হয়। এক পর্যায়ে নতুন করে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ১৯ তারিখে বের করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঘাতক প্রাক্তন স্বামী আহসান আলী মোল্ল্যাকে আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।