সবার সংবাদ ডেস্ক:
ও ছেলেকে বিদেশ নিয়ে যেয়ে খুন করেছে
ও ৭ লাখ টাকার চুক্তিতে ছেলে সাইবুর রহমানকে মানবপাচার দলের সাথে অবৈধভাবে লিবিয়া নিয়ে যেতে গিয়ে মেরে ফেলে ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। পরে, ছেলের মরদেহ দেশে পাঠিয়ে দেয়নি ও। সেই মামলায় পাচারকারীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। তবে, ফাঁসি হলে আরও খুশি হতাম দাবী করে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর থানার বাগোয়ান গ্রামের বৃদ্ধ আকবর আলী মীর আদালত আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে বিলাপ করে বলেন-পাচারকারী ৭লাখ টাকাও নিলো আবার আমার তরতাজা ছেলের জীবনটাও কেড়ে নিলো। বিনিময়ে ছেলের মরদেহটাও ফেরৎ দিলো না।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ২০১২ এর ৬(২) ধারায় যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার ধপোদী নতুনবাজার এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১৪ লাখ টাকা অর্থদন্ড সহ আরও ২ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। মেহেরপুর মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো: তহিদুল ইসলাম এই রায় দিয়েছেন।
এই সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামী মাসুদ রানা পলাতক আছে বলে আদালত জানান। আট বছর আগে এই দিনে মামলায় বাদী আকবর আলী মীর আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগে জানায়- ২০১৪ সালের ১ জুলাই আসামী মাসুদ রানা তার ছেলে সাইবুর রহমানকে ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে এবং ৭ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধ সাপেক্ষে মাসুদ লিবিয়া যাবার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। ঢাকা যাওয়া পর্যন্ত ছেলের সাথে যোগাযোগ হলেও তারপর ছেলের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
বাদীর অভিযোগ আসামী মাসুদ রানা মানবপাচার দলের সক্রিয় সদস্য। সে ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তার ছেলেকে অবৈধভাবে লিবিয়ায় পাচার করার সময় ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনা উল্লেখ করে বাদী মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ২০১২ এর ৬(২) ধারায় আদালতে মামলা করলে মামলার তদন্তে বাদীর অভিযোগ প্রমানিত হয়।
পরে সাক্ষী জবানবন্দিতে অভিযোগের সত্যতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হলে আদালত এই মামলায় আসামীর বিরুদ্ধে এই রায় দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি একেএম আছাদুজ্জামান জানান-মানবপাচার মামলায় মেহেরপুরে এই প্রথম সবোর্চ্চ সাজা প্রদানের রায় হলো। এই রায়ের মধ্যদিয়ে মেহেরপুরে অবৈধভাবে মানবপাচার বা বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা ঘটনা কমে আসবে। আদালতের এই রায়ে বাদী ও আসামী কোন পক্ষই অসন্তুুষ্ট হননি। আসামী মাসুদ রানা মামলার পর জামিনে মুক্তি নিয়ে পলাতক হয়ে আছে।