সবার সংবাদ ডেস্ক:
একদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মেহেরপুর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাসকলাইয়ের মাঠ ও ধান, ভেঙেছে বিভিন্ন রাস্তা ও বাড়ির প্রাচীর। ১৫ দিন আগেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার ছিল চাষীদের। আর একদিনের বৃষ্টিতেই চলছে নিরব কান্না। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যখন যেমন চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে তেমনি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ কাঁদছে কৃষক।
চাষিরা বলছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হলো। এদিকে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে জনগণ। উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা বলছে দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আজকেই মেরামত করা হবে। আর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন ফসলের ক্ষতি হয়েছে মাঠে কাজ করছে কৃষি অফিস। জরিপ শেষে জানা যাবে মোট ক্ষতির পরিমাণ।
স্থানীয়রা জানান, একদিন একটা টানা বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা কল্পনাও করা যায় না। কলাইয়ের মাঠ পুরো ডুবে গেছে। কলাইয়ের উপরে এক দুই হাত পানি। চাষীরা মাঠের আমন ধান নিয়ে খুব শঙ্কায় রয়েছে। কারণ এভাবে দুদিন বৃষ্টি হলে ধান ডুবে যাবে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার তেরাইল-দেবীপুর, চককল্যানপুর, পলাশী পাড়ার মাঠ, ভরাট মাঠের কলাই পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও কিছু মাঠের আমন ধান বিভিন্ন সবজি ফসল ডুবেছে। ভেঙেছে বাড়ির প্রাচীর ও রাস্তা।
মাসকলাই চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, আমার এক বিঘার উপরে কালায় ছিল সব কালায় পানির তলিয়ে গেছে। সব নষ্ট হয়ে যাবে কিছুই আর ঘরে উঠবে না। এতে আমার সবমিলিয়ে আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হলো। বিলের ধারে ধান রয়েছে ধান নিয়েও খুব শঙ্কায় রয়েছি যদি এভাবে বৃষ্টি হয় তাহলে তলিয়ে যাবে ধান।
তেরাইল মাঠের মাসকলাই চাষি রহিদুল ইসলাম বলেন, বিলের ধারে আমার এক বিঘা ৭ কাঠা কলাই ছিল। বেশি অর্ধেক পানির নিচে আর কিছু কলাইয়ের পাতা দেখা যাচ্ছে তবে যেভাবে পানি নামছে সমস্ত কলাই ডুবে যাবে। তিনি আরো বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে ভেবেছিলাম এবার বিলে কলাই চাষ করি। অনেক চাষীর কালায় রয়েছে বিলে। একদিনের বৃষ্টিতে পুরো কলাই মাঠ সব ডুবে গেছে আর হবেনা। এতে চাষের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হলো। এখন ধান নিয়ে বড় শঙ্কায় রয়েছি।
দেবীপুর গ্রামের নাজির আলী বলেন, একদিনের বৃষ্টিতে আমার উঠানসহ প্রাচীর ভেঙ্গে সব পুকুরে চলে গেছে। দ্রুত ভাঙ্গন ঠেকাতে না পারলে বাড়ি নিয়ে খুব শঙ্কায় রয়েছি। মাটি দিয়ে ভরাট করতে প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাগবে।
চককল্যানপুর গ্রামের রুবেল হোসেন বলেন, বিলে আমাদের দুই বিঘা ধান ছিল সব ডুবে গেছে। অন্যান্য ফসল ছিল তাও তলিয়ে গেছে। এভাবে বৃষ্টি হলে ধান হবে না। ১৫ দিন আগেও আমরা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করেছি কিন্তু আল্লাহর দেয়া একদিনের বৃষ্টিতেই সব ডুবে গেছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার দেবীপুর বাজারের পাশের একটি রাস্তা বেশি অর্ধেক ভেঙ্গে গেছে। এতে চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এমনকি অটো, পাখি ভ্যান, আলগামন, মাইক্রো গাড়ি কোন কিছুই চলতে পারছে না। দ্রæত মেরামত না করলে পুরো রাস্তা ভেঙ্গে খালে নেমে যাবে।
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন জানান, রাস্তা ভাঙ্গার কথা শুনে দ্রæত লোক পাঠিয়েছি। আর সরেজমিনে আমি উপস্থিত রয়েছি দ্রæত মেরামতের জন্য। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছি না। এছাড়া অন্য কোন রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা সেগুলো সরেজিমন ঘুরে দেখা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান হোসেন জানান, বৃষ্টিতে অনেক মাঠের ফসল ডুবে গেছে। কৃষি অফিস থেকে জরিপ করা হচ্ছে। জরিপ শেষে জানা যাবে কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।