গাংনীতে ছাড়পত্র ছাড়ায় অবাধে চলছে অবৈধ ইটভাটা
টপ নিউজ মেহেরপুর

গাংনীতে ছাড়পত্র ছাড়ায় অবাধে চলছে অবৈধ ইটভাটা

সবার সংবাদ ডেস্ক:

মেহেরপুরের গাংনীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে অবৈধ ইটভাটা। কয়লার বদলে পুড়ছে কাঠ। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়ায় অবাধে চলছে অবৈধ ইটভাটা। আর এ সকল ইটভাটায় জ্বালানী হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এসকল ভাটায় কাঠের উৎস সংরক্ষিত বা গৃহস্থালীর বাগান। এঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে অদ্যবধি কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

গাংনী শহরের ধানখোলা রোডের পাশে ইটভাটা, কসবা ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পার্শে নতুন ভাবে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগবালাই। এতে পরিবেশ যেমন  নষ্ট  হচ্ছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে আবাদী জমি, উজাড় হচ্ছে গাছ পালা, ভারসাম্য হারাচ্ছে  প্রকৃতি।

সরকারী জারি ইট প্রস্তত ও ইটভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) বলা হয়েছে ক) লাইসেন্স ব্যতীত ইটভাটা পরিচালনাও ইট পোড়ানো হলে ২০ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। খ) কৃষিজমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে ইট তৈরী করা হলে দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। গ) ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করলে অনধিক ৩বছরের কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।ঘ)আইনে বর্ণিত নিষিদ্ধ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করলে ৫বৎসরের কারাদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী বর্তমান চলমান ইটভাটার সংখ্যা ৪৮টি। এসকল ইটভাটার কোনটাতেই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।ইটভাটা মালিকরা নানা কৌশলে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির  সাধারণ সম্পাদক  মনিরুজ্জামান আতু বলেছেন, চায়ের দোকানে সাংবাদিকদের সামনে আমরা প্রতি বছর জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভাটা পরিচালনা  করে থাকি। পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মিলে কাঠ ফাড়াই করে অনিয়মের মাধ্যমে ভাটা পরিচালনা করছেন। আমরা গাংনীতে  সরকারী নিয়ম মেনে ভাটা পরিচালনা করছি।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডাক্তার সুমাইয়া ইয়াসমিন জানান, ইট ভাটায় নির্গত কালো ধোয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাপানি, ক্যান্সারসহ নানা রোগের সৃষ্টি হয়।তাছাড়া অতিরিক্ত কার্বণ-ডাই অক্সাইডের কারণে ফসল ও এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। অনতি বিলম্বে পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ জরুরী।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলার  বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ অধিদপ্তর  ব্যবস্থা নিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে গাংনীতেও ব্যবস্থা নিবে বলে তিনি জানান। এব্যাপারে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসান জানান, যে সকল অবৈধ ইটভাটা আছে সেসকল ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।