গাংনী থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমানের সুদের মামলা নিতে এত আগ্রহ কেন?
টপ নিউজ মেহেরপুর

গাংনী থানার উপ-পরিদর্শক মাসুদুর রহমানের সুদের মামলা নিতে এত আগ্রহ কেন?

নিজস্ব প্রতিনিধি:

মফিজুল ইসলাম মফে সুদ কারবারি আবু হানিফ এর কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা চড়া সুদের উপর নিয়েছিলেন। সুদের ওপর নেওয়া অর্থের ৭২ হাজার টাকাও ফেরত দিয়েছিলেন মফিজুল। তারপরও তাকে যেতে হয়েছে জেলে। এনআই (এসসি ১৮/১৯) মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করলে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর ২০২২) সকালে গাংনী থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মাসুদুর রহমান মফিজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতার মফিজুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৪ সালে গাংনীর সুদকারবারী হানিফের কাছ থেকে তিনি ৮০ হাজার টাকা নেন। এর উপর চড়া সুদ ধার্য করেন হানিফ। মফিজুল মূল টাকা ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে সুদের ৭২ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু এখনও হানিফ তার কাছে ৮০ হাজার টাকা দাবি করছেন। মুখে তিনি এ অর্থ দাবি করলেও মামলায় তিনি ৩ লাখ টাকা দাবির কথা লিখেছেন।

গত ১১ মার্চ গাংনী শহরের উত্তর পাড়া অভিযান চালিয়ে  আবু হানিফ ও আনারুল ইসলাম নামের দুই সুদ কারবারিকে আটক করে গাংনী থানা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনশত ২০ বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাঙ্ক চেক, ছয়শত ৬৯ টি ননজুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্প,১৩টি টালী খাতা,পাঁচটি মোটরসাইকেল, স্বর্ণের চেইন জব্দ করে পুলিশ। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে গাংনী থানা এসআই মাসুদুর রহমান বাদি হয়ে পেনাল কোর্ড- ৩৪/৪০৬/৪২০/৪২৩/৪২৩/৪২৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।

গত ১৯ মার্চ উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে সুদ কারবারি হাতেম আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ দেড় লাখ টাকা, সোনার গয়না ছয় ভরি, ১০০ টাকা মূল্যের  সই করা শাদা স্ট্যাম্প ১২টি ও ব্যাংক চেক ৯টি উদ্ধার করে ও হাতেম আলীকে গ্রেফতার করে এসআই মাসুদুর রহমান। এ মামলার বাদী নাকি তিনি নিজেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, সুদ কারবারিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার জুলুম শুরু করেছেন। এইসব সুদ ব্যবসায়ীকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন কয়েকজন সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীবৃন্দ, ও থানা পুলিশের কয়েকজন দালাল।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, একটি চক্র ঘরে বসিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের মীমাংসা করে দেওয়ার নাম করে সুদ কারবারিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তা ভাগবাটোয়ারা করে খাচ্ছে। তাদের সাথে কিছু ফেসবুক নামধারী সাংবাদিক জড়িত রয়েছে। তবে এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।

গাংনী বাজারের বিভিন্ন মানুষ প্রশ্ন তুলে বসেন, সুদ কারবারিদের দেওয়া এনআই মামলায় এসআই মাসুদুর রহমান সবাইকে গ্রেফতার করছেন আবার সুদ কারবারিদের আটক করে নিজেই হয়ে যাচ্ছেন সেই মামলার বাদী। সুদ কারবারীদের দেওয়া মামলায় নিজেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সুদ কারবারীদের আটকের পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে করছেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা। আসলে এই সুদ কারবারিদের মধ্যে ইন্টারেস্ট কি?? এ নিয়ে চলছে গাংনী শহরে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভিযোগ পেলেই সুদ কারবারিদের আটক এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।